বর্তমানে যারা অনলাইন জগতের সাথে পরিচিত তাদের মধ্যে অধিকাংশ মানুষই হয়তো ওয়ার্ডপ্রেস এই নামটি শুনেছেন বা নামটি শুনে না থাকলেও অনেকবারই হয়তো ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে তৈরি ওয়েবসাইটে ভিজিট করেছেন। আজ আমরা ওয়ার্ডপ্রেস সম্পর্কে জানবো কেন এটি জনপ্রিয় এবং এটির কাজ সম্পর্কে।
ওয়ার্ডপ্রেস কি ?
ওয়ার্ডপ্রেস হচ্ছে মূলত ব্লগ ও ওয়েবসাইট তৈরির জনপ্রিয় একটি মাধ্যম। এটি একটি ওয়েব পাবলিশিং এপ্লিকেশনস এবং কনটেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (CMS), যা পিএইচপি এবং মাইএসকিউএল দ্বারা তৈরিকৃত ওপেন সোর্স ব্লগিং সফটওয়্যার।
ম্যাট মুলেনওয়েগ ২০০৩ সালের ২৭শে মে এটি প্রথম প্রতিষ্ঠা করেন। ২০২৩ সাল পর্যন্ত ৮১০ মিলিয়ন ওয়েবসাইট ওয়ার্ডপ্রেস দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে। যা মোট ওয়েবসাইটের ৪৩% প্রায় অর্ধেকের কাছাকাছি এটি থেকেই বোঝা যায় যে ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইট তৈরির জন্য কতটা জনপ্রিয়।
ওয়ার্ডপ্রেসের কাজ আপনি যদি শিখতে পারেন তবে আপনি নিজের জন্য যেকোনো ওয়েবসাইট বা ব্লগ তৈরি করতে পারবেন এবং এই কাজটি শিখে আপনি ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসগুলোতে কাজ করতে পারবেন এবং ক্লায়েন্টদের তাদের চাহিদামতো ওয়েবসাইট বানিয়ে দিয়ে প্রচুর পরিমাণে টাকা ইনকাম করতে পারবেন।
ওয়ার্ডপ্রেস কেন এত জনপ্রিয় ?
ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইট তৈরির জন্য অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি মাধ্যম এবং এটির ব্যবহার সহজ হওয়াতে বর্তমানে ওয়ার্ডপ্রেস অনেক বেশি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। ইন্টারনেটের ৪৩% ওয়েবসাইট ওয়ার্ডপ্রেস দ্বারা তৈরি করা হয়েছে। এখন আমরা ওয়ার্ডপ্রেস কেন এত বেশি জনপ্রিয় তা সম্পর্কে জানবো ।
> ফ্রি সার্ভিস : ওয়ার্ডপ্রেস ব্যবহার করার জন্য কোনো ধরনের টাকা দিতে হয় না যা এটিকে ব্যবহারকারীদের জন্য অনেক বেশি জনপ্রিয় করে তুলেছে। যার জন্য এখন ভালোমানের ওয়েবসাইট তৈরি অনেক বেশি সহজ হয়ে গিয়েছে।
>এটির ব্যবহার সহজ : ওয়ার্ডপ্রেস ব্যবহার করা অনেক বেশি সহজ যেটি নতুনদের জন্যও বুঝতে অনেক বেশি সুবিধা হয় যার মাধ্যমে নতুনরা ওয়েবসাইট বানানোর কাজ সহজভাবে শিখতে পারে।
> কাস্টমাইজযোগ্য : এখানে আপনি সম্পূর্ণভাবে কাস্টমাইজেশন সুবিধা পাবেন যার মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের ওয়েবসাইট তৈরি করে ফেলতে পারবেন।
> এসইও ফ্রেন্ডলি : ওয়ার্ডপ্রেস এসইও ফ্রেন্ডলি হওয়াতে যেকোনো সার্চ ইঞ্জিনে ওয়েবসাইটগুলোর ভালো র্যাঙ্ক পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
> সিকিউরিটি সিস্টেম : ওয়ার্ডপ্রেসের সিকিউরিটি সিস্টেম অনেক বেশি শক্তিশালী হওয়াতে এটি হ্যাকারদের থেকে ওয়েবসাইটগুলিকে রক্ষা করে।
> অনেক ব্যবহারকারী : ওয়ার্ডপ্রেস এমন একটি প্লাটফর্ম যা দিয়ে বিশ্বের ৪৩% ওয়েবসাইট তৈরি হয়েছে তাই এটির ব্যবহারকারীর সংখ্যাও অনেক বেশি।
> ওপেন সোর্স : ওয়ার্ডপ্রেস হলো ওপেন সোর্স প্লাটফর্ম যেটি যে কেউ ব্যবহার ও পরিবর্তন করতে পারে।
> থিম এবং প্লাগইন : এই ওয়েবসাইট এর অন্যতম আকর্ষণ হচ্ছে এর ডিজাইন। এখানে অসংখ্য ফ্রি থিম রয়েছে যা আপনি আপনার ওয়েবসাইট এ ব্যবহার করে ওয়েবসাইটকে অনেক বেশি আকর্ষণীয় করে তুলতে পারবেন। তাছাড়া ওয়ার্ডপ্রেসে বিভিন্ন ধরনের প্লাগইন আপনি ব্যবহার করতে পারবেন যার মাধ্যমে আপনি ওয়েবসাইটের জন্য বিভিন্ন রকমের প্রয়োজনীয় কাজ করতে পারবেন।
এই সমস্ত সুবিধার জন্য বর্তমানে ওয়ার্ডপ্রেস একটি জনপ্রিয় প্লাটফর্ম হিসাবে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠেছে।
ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে কী ধরনের ওয়েবসাইট তৈরি করবেন ?
ওয়ার্ডপ্রেস সর্বপ্রথম যদিও সাধারণ একটি টুল হিসাবে যাত্রা শুরু করে তারপরও সময়ের সাথে সাথে এটি নিজের রূপ বদলেছে বর্তমানে ৮১০ মিলিয়নের উপরে ওয়েবসাইট ওয়ার্ডপ্রেস দ্বারা চলছে। ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে বিভিন্ন ধরনের ওয়েবসাইট তৈরি করা যায় আজকে আমরা জানবো কি কি ওয়েবসাইট ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে তৈরি করা যায়
বিজনেস ওয়েবসাইট
ই-কমার্স স্টোর
ব্লগ ওয়েবসাইট
পোর্টফোলিও ওয়েবসাইট
ফোরাম ওয়েবসাইট
সোশ্যাল কমিউনিটি ওয়েবসাইট
মেম্বারশিপ ওয়েবসাইট, ইত্যাদি।
উল্লেখিত ওয়েবসাইট ছাড়াও আরো বিভিন্ন ধরনের ওয়েবসাইট আপনি ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে তৈরি করতে পারবেন। এখন বর্তমানে বেশিরভাগ ওয়েবসাইট ওয়ার্ডপ্রেস দ্বারা তৈরি হচ্ছে।
ওয়ার্ডপ্রেস শিখে কীভাবে টাকা ইনকাম করবেন ?
ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে ওয়েবসাইট বানিয়ে আপনি বিভিন্ন ভাবে টাকা ইনকাম করতে পারবেন। মার্কেটপ্লেসে এ গিয়ে যেমন ক্লায়েন্টকে ওয়েবসাইট বানিয়ে দিয়ে টাকা ইনকাম করতে পারবেন তেমনি নিজের ওয়েবসাইট থেকেও টাকা ইনকাম করতে পারবেন।
> ই-কমার্স : আপনি ওয়ার্ডপ্রেসের WooCommerce এই প্লাগইনটি ব্যবহার করে আপনি আপনার ওয়েবসাইটকে ই-কমার্স ওয়েবসাইটে পরিণত করতে পারেন যার মাধ্যমে আপনি নিজেই নিজের বিজনেস তৈরি করে সেখান থেকে টাকা ইনকাম করতে পারেন।
> ডিসপ্লে এডস : আপনি আপনার ওয়েবসাইটে গুগল এডসেন্স পেলে সেখান থেকে নিজের ওয়েবসাইটে ডিসপ্লে এড দেখিয়ে টাকা ইনকাম করতে পারেন।
> স্পন্সরড পোস্ট :আপনি আপনার ওয়ার্ডপ্রেস ব্লগ এ স্পন্সর এর পোস্ট করে টাকা ইনকাম করতে পারেন।
> এফিলিয়েট মার্কেটিং : আপনি নিজের ওয়েবসাইটে অন্য কারোর পণ্যের প্রচার করে সেখান থেকে টাকা ইনকাম করতে পারেন।
> ডিজিটাল পণ্য বিক্রয় : আপনি নিজের ওয়েবসাইটে বিভিন্ন ডিজিটাল পণ্য যেমন : বিভিন্ন ধরনের কোর্স ,বিভিন্ন ধরনের সফটওয়্যার এসব বিক্রি করে টাকা ইনকাম করতে পারেন।
> সেবা প্রদান : আপনি আপনার ওয়েবসাইটে বিভিন্ন ধরনের সেবা অফার করতে পারেন যেমন আপনি বিভিন্ন কোর্স সক্রান্ত সেবা প্রদান করতে পারেন ।
এই উপায়গুলো ছাড়াও আরো বিভিন্নভাবে আপনি ওয়ার্ডপ্রেস ব্যবহার করে ইনকাম করতে পারেন।আপনি এমন একটি ওয়েবসাইট তৈরি করুন যার মাধ্যমে অনেক বেশি ট্র্যাফিক রেগুলার আপনার ওয়েবসাইটে এ ভিজিট করলে তার মাধ্যমে আপনি নিজের ইনকাম বাড়িয়ে নিতে পারবেন।
মূলত ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে আপনি যতটা সহজে ওয়েবসাইটে তৈরি করে সেটি কাস্টমাইজ করতে পারবেন অন্য ভাবে বা কোডিং করে আপনি ওয়েবসাইট তৈরি করতে গেলে অনেক ধরনের ঝামেলায় পড়তে পারেন। তাই বর্তমানে ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে ওয়েবসাইট তৈরির চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। প্রত্যেক বছর ২ মিলিয়নের উপরে ওয়েবসাইট ওয়ার্ডপ্রেস দ্বারা তৈরি হচ্ছে। ১.১ মিলিয়নের উপরে ডোমেইন প্রতি ৬ মাসে ওয়ার্ডপ্রেসে রেজিস্টার হচ্ছে। এটির সাহায্যে প্রতিদিন কমপক্ষে ৫০০০ এর উপরে ওয়েবসাইট তৈরি হচ্ছে।। যেটি ওয়ার্ডপ্রেসের জনপ্রিয়তার উদাহরণ। আপনি যদি একজন ওয়েব ডেভেলপার হতে চান তবে ওয়ার্ডপ্রেস হতে পারে আপনার জন্য সঠিক একটি মাধ্যম।
ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে আপনি যেকোনো ওয়েবসাইট তৈরি করার মাধ্যমে আপনি সেটি যেমন নিজের জন্য কাজে লাগাতে পারবেন তেমনি আপনি ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসগুলোতে ওয়েবসাইট ডিজাইন করে ক্যারিয়ার গড়তে পারবেন। মার্কেটপ্লেসগুলোতে ওয়েবসাইটের প্রচুর কাজ রয়েছে যা আপনাকে সহজেই কাজ পেতে সাহায্য করবে কেননা কাজ বেশি থাকাতে আপনার কাজ পাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যাবে। আর তাই ক্যারিয়ার গড়ার জন্য ওয়ার্ডপ্রেস হতে পারে আপনার এগিয়ে যাওয়ার মাধ্যম।
ওয়ার্ডপ্রেস কীভাবে শিখবেন?
বর্তমানে ওয়ার্ডপ্রেস খুবই চাহিদা সম্পূর্ণ একটি কাজ ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে আপনি অনেক ধরনের ওয়েবসাইট তৈরী করতে পারেন। আপনি যদি ফ্রিল্যান্সিং করতে চান তবে আপনি ওয়ার্ডপ্রেসের কাজ শিখতে পারেন কেননা ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসগুলোতে যেমন : ফাইভার ,ফ্রিল্যান্সার ডট কম ,আপওয়ার্ক এই সাইটগুলোতে ওয়েবসাইট বানানোর কাজের প্রচুর চাহিদা রয়েছে তাই আপনি যদি ওয়ার্ডপ্রেস শিখতে পারেন তবে এসব মার্কেটপ্লেসে ক্লায়েন্টের একটি ওয়েবসাইট বানিয়ে হাজার ডলার পর্যন্ত ইনকাম করতে পারেন তাই আমরা এখন জানবো কীভাবে এই ওয়ার্ডপ্রেস শিখতে হবে।
মূলত যেকোন স্কিল শেখার জন্য ফ্রি এবং পেইড দুই ধরনের রিসোর্স আছে। ফ্রি রিসোর্স এর মধ্যে রয়েছে ইউটিউব , অনলাইন ব্লগ , ফ্রি সেমিনার ইত্যাদি। আর পেইড রিসোর্স এর মধ্যে রয়েছে অনলাইন / অফলাইন কোর্স , পেইড ওয়ার্কশপ ইত্যাদি। ফ্রি রিসোর্স থেকে খুব সহজেই ওরপে শিখতে পারবেন কিন্তু প্রফেশনালি এবং বেস্ট প্র্যাকটিস আয়ত্ত করতে প্রয়োজন দক্ষ মেন্টরের সাহায্য।
তাই আজই ওয়ার্ডপ্রেস শেখার পদক্ষেপ নিন এবং এই সেক্টরে নিজের শক্ত অবস্থান নিশ্চিত করতে একধাপ এগিয়ে যান
আসন সংখ্যার উপর ভিত্তি করে ইউ ওয়াই ল্যাবের সকল অনলাইন কোর্সে পাবেন ১০০% স্কলারশিপ! আসন নিশ্চিত করতে রেজিঃ করুন এখনই।