ডিজিটাল মার্কেটিং এর কথা আমরা কমবেশি সবাই জানি।ডিজিটাল মার্কেটিং এর একটি বড় সেক্টর জুড়ে আছে সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশন বা এসইও ।আজকে এর বিষয় নিয়ে জেনে নেওয়া যাক-
এসইও কি?
এসইও (SEO) এর পূর্ণরূপ হচ্ছে সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (Search Engine Optimization)। অর্থাৎ আপনি যখন আপনার কনটেন্টকে কোনো সার্চ ইঞ্জিন এর জন্য অপটিমাইজ করবেন ,তখন অপটিমাইজ করার প্রক্রিয়াই হলো সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশন।আরও সহজ ভাবে বলা যায়,আমরা যখন গুগল বা অন্য কোনো সার্চ ইঞ্জিনে কোনো কিছু লিখে সার্চ করি তখন সার্চ ইঞ্জিন আমাদের অনেক গুলো ওয়েব পেইজ দেখায়। আমরা সাধারানত র্যাংকিং এ প্রথম সারির ওয়েব সাইটগুলোতে যাবো। ওয়েব সাইট গুলোকে প্রথম সারিতে নিয়ে আসার জন্যই সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন করা হয় ।
এটি বিভিন্ন রকমের হতে পারে ।যেমনঃ on-page seo,off page- seo,technical seo etc.
অন পেইজ seo কি?
অন পেইজ হচ্ছে ওয়েব সাইটের মধ্যকার কাজ। যেমন- url,title,meta tag,description,subheading ,body content ,internal link etc.অর্থাৎ ওয়েবসাইট এর ভেতরে যে কাজগুলো করলে সার্চ ইঞ্জিন সার্চ রেজাল্টের উপরে নিয়ে আসে তাকে অন পেজ এসইও বলে। সধারানত on-page seo করা হয় সার্চ ইঞ্জিন ও ভিজিটরদের নিয়ে। এটি ওয়েব সাইটের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
অফ পেইজ Seo কি?
আপনি একটি ওয়েব সাইটকে সার্চ রেজাল্টের উপরে আনার জন্য এমন কিছু টেকনিক ব্যবহার করবেন, যা ওয়েব সাইটের ইন্টারনালে কাজ করতে হয় নাহ, কিন্তু ওয়েব সাইটেরর বাইরে ( যেমন- backlink,social media sharing ,social bookmarking,guest posting ) থেকে অপটিমাইজেশন করতে হয় তাই হলো off-page seo,এর জন্য গুরুত্বপূর্ণ হলো কনটেন্ট । লিংক বিল্ডিংয়ের মাধ্যমে ওয়েবসাইটের অর্গানিক ট্রাফিক বৃদ্ধি করাই off-page seo.
টেকনিক্যাল এসইও কি?
কোনো একটা ওয়েব সাইটের পেইজ ও সার্ভার অপটিমাইজেশন এর উপর মনিটাইজ করা হয় ,যেন সার্চ ইঞ্জিন স্পাইডার গুলো কার্যকরভাবে আপনার ওয়েবসাইটটি স্ক্রল এবং ইনডেক্স করতে সক্ষম হয়।এর মধ্যে রয়েছে,(Sitemap,Mobile Usability ,Page Loading speed), Website structure & Design এবং URL structure etc.
এসইও কীভাবে কাজ করে?
সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশন লং টাইম প্রক্রিয়া।আজকে আপনি আপনার ওয়েব সাইটের জন্য কাজ করবেন অন্যদিন করবেন না।কিন্তু ভাল ফলাফল পাবেন বিষয় টা এমন না। একটা ওয়েব সাইট অপ্টিমাইজেশন করার জন্য কিছু প্রক্রিয়া কাজ করে লং টার্মের জন্য।
> লিংক বিল্ডিংঃপেইজ অপ্টিমাইজ করার সবচেয়ে পাওয়ারফুল টেকনিক হলো লিংক বিল্ডিং। আপনার সাইটের লিংক অন্যের ওয়েব সাইটে শেয়ার করাকে লিংক বিল্ডিং বলে। লিংক বিল্ডিংকে ব্যকলিংক ও বলে। অর্থাৎ কোনো ব্যক্তি যদি আপনার ওয়েবসাইটে ভিজিটর হয়ে এসে আপনার মেনশন করা আরেকটা লিংকে ক্লিক করে, তাহলে সেটা অফ পেজ অপ্টিমাইজেশনের মধ্যে পরে গেলো। আর্টিকেলের মধ্যে যত বেশি ওয়েবসাইটের লিঙ্ক মেনশন করা হয়, সেসব পেজ সার্চ ইঞ্জিনের উপরের দিকে থাকে।
> কন্টেন্ট ঃ কন্টেন্ট বলতে সাধারণত ব্লগকে বোঝানো হয়। আপনার ব্লগ বা কনটেন্ট যদি কী ওয়ার্ড সমৃদ্ধ হয় তাহলে খুব সহজেই ওয়েবসাইটে ট্রাফিক পেয়ে যাবেন।আর কি-ওয়ার্ড রিসার্চ হলো,(সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন) -এর একটি এমন গুরুত্বপূর্ণ অংশ , যেখানে জনপ্রিয় এবং সার্চ ইঞ্জিনগুলোতে অধিক পরিমাণে সার্চ হওয়া keywords এবং key phrase খুঁজে বের করা হয়।
>পেজ স্ট্রাকচার: পেজ স্ট্রাকচার এর মাধ্যমে কোনো ওয়েবসাইটের যেকোনো পেজ অপটিমাইজ করে বেশি ট্রাফিক বা ভিজিটর পাওয়া যায়। পেজ স্ট্রাকচার অনপেইজ আপ্টিমাইজেশন ও বলা হয়ে থাকে ।যেমন: meta title,url set-up, meta description ,image optimize, internal link,site speed,webmaster tools, analytical setup ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত।
এসইও করে একটি ওয়েব সাইটকে কিভাবে র্যাংক করানো যায়?
একটি ওয়েব সাইটকে সার্চ ইঞ্জিন এর টপ লিস্টে আনার জন্য seo এর বিকল্প নেই । একটি ওয়েব সাইটকে অপটিমাইজ করার জন্য কিছু ধাপ রয়েছে,চলুন এই সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক
কী ওয়ার্ড রিসার্চ ঃসার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন এর একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো কী ওয়ার্ড রিসার্চ ।্সঠিক কী ওয়ার্ড আপনার কন্টেন্টকে তার টার্গেটেড অডিন্সের কাছে নিয়ে যাবে। কোনো আর্টিকেল seo করার প্রথম ধাপ হলো কী ওয়ার্ড রিসার্চ,স্ট্রং কি-ওয়ার্ড এর ফলে ওয়েব সাইটে বেশি ভিজিটর ও ট্রাফিক আসে।আপনি যেই বিষয় নিয়ে আর্টিকেল লিখছেন, সেই বিষয়ে গুগল সার্চে কতটা সার্চ হচ্ছে, লোকেরা আপনার লেখা আর্টিকেলের বিষয় নিয়ে গুগলে সার্চ করছে কি না, বা যদিও সার্চ করছে তাহলে কতটুকু সার্চ করছে, এই বিষয়ে ভাল করে বুঝে আমাদের কী- ওয়ার্ড বের করতে হবে। আমরা যখন কোন প্রোডাক্ট ,ব্রান্ডস, সার্ভিসের উপর নির্ভর করে সঠিক কী- ওয়ার্ড বের করতে হবে। মনে রাখতে হবে,সব জনপ্রিয় কি-ওয়ার্ড সব ধরনের প্রোডাক্টের সাথে সাদৃশ্য থাকে নাহ। আবার , কি-ওয়ার্ড যত জনপ্রিয় হয়,তখন ওয়েব সাইট র্যাঙ্ক করানো ততটা কঠিন হয়ে পড়ে। কারন ,একসাথে অনেকে সেই একই কি-ওয়ার্ড তাদের কন্টেন্টে ব্যবহার করে থাকেন।ফলে বুঝেশুনে ভালো কোয়ালিটি মেইনটেইন করে আমাদের কি-ওয়ার্ড ব্যবহার করতে হবে।
কন্টেন্ট রাইটিং:আপনি যখন একটা নিস( Niche) নিয়ে কাজ করবেন তখন আপনাকে সঠিক কি-ওয়ার্ড নির্বাচন করতে হবে,এবং কী- ওয়ার্ড এর সাথে সাদৃশ্য রেখে একটা কন্টেন্ট বা ব্লগ সাজাতে হবে। আপনার কি -ওয়ার্ড যতোটা অথেন্টিক হবে,এটা ততটা ওয়েব পেইজ এর প্রথম সারিতে র্যাঙ্ক করবে।
আপনি যদি নিয়মিত ওয়েবসাইটে কোয়ালিটি সম্পন্ন কন্টেন্ট পাবলিশ করেন এবং গুগল আপনাকে বিশ্বাসযোগ্য ভাবে ,তাহলে আপনার ওয়েব সাইটকে search engine results pages (SERPs) এ সাজেস্ট করবে।
লেখার মধ্যে অতিরিক্ত কথা না বলে তথ্যবহুল লেখার চেষ্টা করবেন,রিডাররা যা যানতে চাইবে ঠিক জিনিসগুলো দেওয়ার চেষ্টা করতে হবে।
কন্টেন্ট এর মূল কী-ওয়ার্ড স্বাভাবিক ভাবে ্লেখার মাঝে ব্যবহার করতে হবে।পাঠক যেনো বুজতে না পারে আপনি কি-ওয়ার্ড গুলো জোর করে বসিয়েছেন।পাঠকরা যেনো সহজেই আপনার লেখা উপভোগ করতে পারে।
ব্যাকলিঙ্ক এসইওঃ off -page seo এর একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো ব্যাকনিঙ্ক । ওয়েব সাইটকে বা নির্দিষ্ট কোনো কন্টেন্টকে কোনো কী -ওয়ার্ড এর সার্চ ইঞ্জিন এর টপে নিয়ে আসতে চান,তখন ব্যাকনিঙ্ক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা অনেক বেশি।ব্যাকলিঙ্ক বলতে সাধারণত বুঝায় ,আপনার urllink অন্য আরেকটি ওয়েবসাইটে উল্লেখ থাকবে । আপনি অন্য ওয়েবসাইট থেকে নিজের ওয়েবসাইটের জন্য একটি এক্সটার্নাল লিঙ্ক পাবেন।আপনাকে অবশ্যই গেস্ট পোস্ট ব্যবহার করতে হবে ব্যাকলিংক করার জন্য।বিভিন্ন ব্লগের কমেন্ট সেকশনে ও আপনি আপনার ওয়েবসাইট টা লিঙ্ক টা দিতে পারেন ।এভাবে ব্যাকলিঙ্কগুলোর মধ্যে Google bots আপনার ওয়েবসাইটের লিঙ্ক সরবরাহ করবে । এর ফলে সার্চ ইঞ্জিনের আপনার ওয়েবসাইটের প্রতি বিশ্বাস বাড়ে এবং ধীরে ধীরে ওয়েবসাইটের Google search ranking বাড়তে থাকে।
এসইও করে ওয়েবসাইট র্যাংকিং করতে কত সময় লাগে?
একটি নতুন ওয়েবসাইটকে সার্চ ইঞ্জিন এর ফ্রন্ট পেইজে আনার জন্য আপনাকে অনেকগুলো প্রসেস ফলো করতে হবে,যার অধিকাংশ আমরা আলোচনা করেছি ।ওয়েব সাইটকে র্যাংকে আনার জন্য নির্দিষ্ট কিছু সময়ের দরকার পরে (গড় হিসাবে ৩-৯মাস) ,বিভিন্ন কারণের উপর নির্ভর করে সময়ের পরিবর্তন হয়।
SEMrush এর এক গবেষণায় এসেছে ,
28,000 ডোমেইন পর্যালোচনা করে জানা গেছে ,শুধুমাত্র ৭.৬৫% ডোমেইন এর মধ্যে কন্টেন্ট র্যাংকিং করতে টপ -100 শীর্ষ তালিকায় আসতে প্রায় ১৩ মাস সময় লেগেছে। এবং যে ওয়েবসাইটগুলোর ১৩ মাস সময় নিয়েছে র্যাংকিং আসার জন্য তাদের মধ্যে ৯২.৩% এর ডোমেইন এর একটি করে ব্যাকলিংক রয়েছে। ছয় মাসের মধ্যে ,মাত্র ১৯% ডোমেইন শীর্ষ- ১০ এ জায়গা করে নিয়েছে। আবার এদের মধ্যে ৫৫.১% যারা শীর্ষ-১০ এ যায়গা করে নিতে পারেনি ,তাদের কোনো ব্যাকনিঙ্ক ছিল নাহ। আপনার ওয়েবসাইট র্যাঙ্কে আনার জন্য ব্যাকলিংক অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে ।
Ahrefs দ্বারা এক গবেষণায় এসেছে ,
গুগল এর শীর্ষ -১০ পেইজে যারা জায়গা করে নিয়েছে তাদের মধ্যে বেশিরভাগ ওয়েবসাইট গুলো এটি করেছে ৬১-১৮২ দিনের মধ্যে। তবে এটি শুধু করেছে ৫.৭% এটি করতে পেরেছে।বলতে হবে অবশ্যই তাদের লাক ফেবার ভাল ছিলো।আর বাকি ৯৫% টপ-১০ এ জায়গা করতে পারে নাই।
Neil Patel এর মতে ,
পেইজ -১ এ আসার জন্য কতো সময় লাগবে তার উত্তর দেওয়া ,অনেক কিছুর উপর নির্ভর করে ।প্যাটেল এর এক গবেষণায় দেখা গেছে সর্বোচ্চ র্যাংকের অবস্থানে গড় সময় ছিলো ৩.৩৯ বা ১০০ দিন।
সঠিক ভাবে এটি কেউই বলতে পারে নাহ.একটি ওয়েবসাইট র্যাংক করতে অনেক কৌশলের দরকার হয়,আপনার কম্পিটিটর কারা,টার্গেটেড কী-ওয়ার্ড,আপনি কোন ওয়েবসাইট থেকে ব্যাকলিঙ্ক নিচ্ছেন ,on-page seo,off-page seo ,technical-seo ইত্যাদি ঠিক ভাবে রিসার্চ করছেন কিনা তার উপর।
ওয়েবসাইট র্যাংকিং করার পরও কি seo করতে হবে?
সার্চ ইঞ্জিন এর টপ পেইজে আসা যুদ্ধ জয় করে ফেলা। একটা ওয়েব সাইট র্যাংকিং করে টপ পেইজে আনার পরে ,তার পর্যবেক্ষন আপনাকেই করতে হবে।প্রতিদিন লক্ষাধিক পেইজ seo (search engine optimization) করছে তাদের কে টপ পজিশনে আনার জন্য ।এখন আপনি যদি ভেবে থাকেন আপনার সাইট একবার র্যাংকিং এ উঠিয়েছেন আর কোনো কিছু করার দরকার পড়বে নাহ,তাহলে আপনি গুগল এর পেনাল্টি খাবেন।আপনার url কে শীর্ষে রাখার জন্য নিয়মিত আপনাকে তার আপডেট রাখতে হবে।আপনি যদি এটা না করেন তাহলে আপনার র্যাংকিং ও হারিয়ে ফেলতে পারেন।
সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন এটা কিভাবে কাজ করে এর কোনো পরিপূর্ণ সমাধান নেই ।বর্তমান তথ্যপ্রযুক্তির যুগে গুগল বা অন্যান্য সার্চ ইঞ্জিন গুলো দিন দিন আপডেট হচ্ছে। এর জন্য আমাদের দরকার প্রতিনিয়ত আপডেট গুলার খোজ নেওয়া এবং নতুন এলগরিদমের নিয়ম অনুযায়ী ওয়েব সাইটে নিয়মিত কন্টেন্ট দেয়া ও অপটিমাইজ করা।
ReplyForward |
আসন সংখ্যার উপর ভিত্তি করে ইউ ওয়াই ল্যাবের সকল অনলাইন কোর্সে পাবেন ১০০% স্কলারশিপ! আসন নিশ্চিত করতে রেজিঃ করুন এখনই।