ফেইসবুক মার্কেটিং কী , কেন কিভাবে ?

Created by UY LAB in Digital Marketing 16 Oct 2023
Share

যদি এক কথায় বলি তাহলে বর্তমানে বিশ্বের প্রথম ইন্টারনেট ভিত্তিক যোগাযোগ মাধ্যম হচ্ছে facebook।২০০৪ সালে মার্ক জাকারবার্গ এর হাত ধরে যাত্রা শুরু হয়।জরিপ অনুযায়ী বর্তমানে প্রায় ২.৯৩ বিলিয়ন মানুষ ফেসবুকে সক্রিয়।শুরুতে ফেইসবুক নিয়ে নেতিবাচক মন্তব্য এবং অনেক বাধার সম্মুখীন হলেও এখন এটি জনপ্রিয়তার শীর্ষে।শুরুর দিকে অনেক ফিচার এতে না থাকলেও এখন অনেক ফিচার এতে যোগ হয়েছে।যেহেতু অনেক মানুষের সমাগম সেহেতু বুঝতেই পারছেন,অনলাইনের সবচেয়ে বড় মার্কেটপ্লেস এটি।    


ফেইসবুক মার্কেটিং কী?

যেহেতু আগেই বলেছি অনলাইনের সবচেয়ে বড় প্লাটফর্ম ফেসবুক তাই ডিজিটাল মার্কেটিং এর একটি বৃহৎ মার্কেট প্লেস হলো ফেসবুক মার্কেটিং।ফেসবুক মার্কেটিংর এর মাধ্যমে পণ্য বা সেবা বিক্রি করা হয়।এটি একটি বৃহৎ মার্কেটপ্লেস যা ব্যবহারকারীদের সাথে সরাসরি যোগাযোগ সংযোগ করে ও বিজনেস এর জন্য সঠিক পাবলিসিটি সরবরাহ করে । ফেসবুক মার্কেটিং করে আপনি আপনার পণ্য ও সেবা সম্পর্কে সবকিছু জানতে পারবেন এবং গ্রাহকের কাছে সঠিক সেবা প্রদান করতে পারবেন।

এখনকার দিনে প্রায় সকল ধরনের ছোট বড় ব্রান্ড বা কোম্পানির নিজস্ব সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম রয়েছে।একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীর ক্ষেত্রে হয়ত তার ব্যবসা সংক্রান্ত ওয়েবসাইট তৈরি করে পাবলিশ করা সম্ভব নাহ,কিন্তু সে সহজেই সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে একটি পেইজ খুলে তার কোম্পানির প্রমোট করতে পারবে। ফেসবুক ব্যবহার করে কাস্টমারদের সাথে যোগাযোগ বৃদ্ধির মাধ্যমে  পণ্যের প্রচারণার কৌশলকেই ফেসবুক মার্কেটিং বলে।

কেন ফেইসবুক মার্কেটিং করবেন ?

অনেকের মনে হয়ত এই প্রশ্নটি আসতে পারে তাই আপনাদেরকে কিছু তথ্য দেই।আগেই বলেছি বর্তমানে  ফেইসবুক ইউজার এর সংখ্যা প্রায় ২.৯৩ বিলিয়ন।বর্তমানে এই প্লাটফর্মে ১০ মিলিয়ন এর মতো সক্রিয় বিজ্ঞাপন দাতা রয়েছে এবং এই প্লাটফর্মে বিজ্ঞাপনের দর্শক রয়েছে প্রায় ২.২৪৯ বিলিয়ন।ফেইসবুক এর মতেই তাদের নিজেদের প্লাটফর্মে প্রায় ২০০ মিলিয়ন এর বেশি ভিন্ন ভিন্ন ক্যাটাগরির ব্যবসা রয়েছে।

উপরে বর্ণিত তথ্যগুলোর সাথে বুঝার জন্য আপনাদের আরো কিছু সুবিধার কথা বলি,যেমন -

* এই প্লাটফর্মে অনেক ক্যাটাগরিতে বিজ্ঞাপন দেওয়া যায়।যেমন ধরেন - ইমেজ অ্যাড,ভিডিও  অ্যাড,পোল অ্যাড,ক্যারোসেল অ্যাড,স্লাইডশো অ্যাড,কালেকশন অ্যাড,লিড অ্যাড,ডায়নামিক অ্যাড,মেসেঞ্জার অ্যাড,স্টোরি অ্যাড,ইত্যাদি।এই অ্যাড গুলোর প্রতিটি ধরণ আলাদা আলাদা যা মানুষের কাছে এক ভিন্ন ধর্মী ভালো লাগা নিয়ে আসে।  

* প্রতিটি গ্রাহক একটি দিনের উল্লেখযোগ্য সময় তারা ফেইসবুক এ ব্যয় করে। 

* আপনি যেই যেই ধরনের গ্রাহক গুলোকে চান তাদেরকে উদ্দেশ্য করেই আপনার বিজ্ঞাপন  তাদের কাছে পৌঁছে দিতে পারবেন। 

* এই প্লাটফর্মটি দ্রুততার সাথে ব্র্যান্ড সচেতনতা বাড়ায় এবং এই প্লাটফর্মটি খুবই বাজেট বান্ধব। 

* ভিজিটর এবং ট্র্যাফিক বাড়ানো এই ওয়েবসাইডে খুবই সহজ। 

দিন দিন বেড়েই চলেছে ফেইসবুক ইউজার এর সংখ্যা।ক্রেতা এবং বিক্রেতার সবচেয়ে জনপ্রিয় প্লাটফর্ম হলো এটি।তাহলে এখন আপনাকেই আমি একটি প্রশ্ন করছি যে কেন ফেইসবুক মার্কেটিং করবেন না !!  


ফেইসবুক মার্কেটিং কত প্রকার?

ফেসবুক মার্কেটিং সাধারণত দুইভাবে করে থাকে।যেমনঃঅরগানিক (ফ্রি)মার্কেটিং ও পেইড মার্কেটিং।

অরগানিক বা ফ্রি ফেসবুক মার্কেটিং?

আপনি যখন ফেসবুকে কোনো রকম খরচ ছাড়া আপনার বিজনেসের ব্রান্ডিং ও পণ্যের সেবার সুযোগ সুবিধা ফেসবুক ব্যবহারকারীদের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে পারবেন ,তখন তাকে অরগানিক বা ফ্রি ফেসবুক মার্কেটিং বলে।

নিজের কোম্পানি বা ব্রান্ডের নামে একটি ফেসবুক পেইজ ওপেন করে ফ্রি ফেসবুক মার্কেটিং করতে পারেন। আপনার পেইজে ফ্যান ফলোয়্যারস যত বেশি আপনার অরগানিক ফেসবুক মার্কেটিং ততো বেশি হবে।তবে এই প্ল্যাটফর্মটিতে কাজ  করার জন্য আপনার অ্যাকাউন্ট টি হতে  হবে স্ট্যান্ডার্ড এবং আপডেট ।সোশ্যাল মিডিয়াতে কোনো অপরিচিত ব্যক্তিকে কেউ বিশ্বাস করতে চায় নাহ,গ্রাহকদের কাছে নিজেকে পরিচিত থাকার জন্য নিয়মিত আপনাকে আপনার পণ্যর ভ্যালু সম্পর্কে জানাতে হবে।বিভিন্ন ধরনের পণ্যের ভিডিও আপলোড,কন্টেন্ট আপলোড দিতে হবে। এভাবে নিয়মিত আপনি সংযোগ পোস্ট কমেন্ট করে,গ্রাহকদের বিশ্বাস অর্জন করতে পারলে আপনি আপনার বিজনেসের ফ্রি ফেসবুক মার্কেটিং করতে পারবেন খুব সহজেই। 

কোনো ধরনের পেইড ডিস্ট্রিবিউশন ছাড়া যত সংখ্যক মানুষ আপনার শেয়ার করা পোস্ট  ভিউ করে বা পড়ে তাকে আমরা অরগানিক রিচ বলে থাকে।ফ্রি ফেসবুক মার্কেটিং এর সুবিধা হলো আপনি এখানে কোনো টাকা ছাড়াই আপনি মার্কেটিং করতে পারবেন,ব্র্যান্ড সচেতনতা বৃদ্ধিই করতে পারবেন,যে-সব জায়গায় পেইড মার্কেটিং পৌঁছায় না সেখানে ফ্রি মার্কেটিং পৌঁছে যাবে। 

কিন্তু,ইউজার টার্গেট,নির্দিষ্ট ক্যাটাগরির মানুষকে টার্গেট করতে পারবেন না।এবং আপনার পোস্ট দেখার জন্য উসারদের সব সময় আপনাকে ফলো করতে হবে। 

বর্তমানে ফেসবুক ব্যবহারকারীর সংখ্যা দিন দিন বেড়ে চলছে ,বেশি ইউজার এর কারণে অরগানিক রিচ পাওয়া অনেক কঠিন হয়ে গেছে। আপনি যদি পেইড প্রমোশনে করতে না চান ,তাহলে আপনাকে অনেক কৌশলী হতে হবে এবং ক্রিয়েটিভ আইডিয়ার মাধ্যমে আপনাকে পেইজের রিচ বাড়াতে হবে।

পেইড ফেইসবুক মার্কেটিং কী?

অর্থের বিনিময়ে ফেসবুক এড ক্যাম্পেইন করে টার্গেটেড অডিন্সের কাছে আপনার সেবা বা পণ্য পৌঁছে দেওয়াই হলো পেইড ফেসবুক মার্কেটিং।এক কথায় ফেসবুক বুস্ট এর মাধ্যমে যে এড ক্যাম্পেইন করে তাকে পেইড ফেসবুক মার্কেটিং বলে।এখানে আপনি আপনার নিজের পছন্দ অনুযায়ী এড রান করাতে পারবেন,যেমনঃআপনি কোন ধরনের কাস্টমার চাচ্ছেন,তাদের বয়স কেমন হবে,কোন এরিয়্যার কাস্টমার আপনি চাচ্ছেন সবটা আপনি পেইড মার্কেটিং এর মাধ্যমে করতে পারবেন,নানান ফরম্যাটের পোস্ট নির্বাচন করতে পারবেন,ইউজার টার্গেট করে নানা ক্যাটাগরিতে ভাগ করতে পারবেন এবং বাজেট অনুসারে সেল বাড়ানো এবং রেভিনিউ বৃদ্ধি করতে পারবেন। 

কিন্তু এখানে কিছু জিনিস মনে রাখবেন,তা হলো - এনালাইটিকস এর পিছনে প্রচুর সময় ব্যয় করা,কনভার্সন রেট কমে যাওয়া,সময় মতো রিচ না আশা। এই সমস্যা গুলো এই পেইড মার্কেটিং এ হতে পারে।

অনেকের কাছে মনে হতে পারে পেইড মার্কেটিং অনেক ব্যয়বহুল কিন্তু ব্যাপারটি আসলে তা না।এই প্লাটফর্ম এ টেলিভিশন,খবরের কাগজ এরচেয়ে অনেক কম খরচে বিজ্ঞাপন দেওয়া যায়। 

কিছুদিন আগে খেয়াল করলেও দেখা যেতো কিছু বড় বড় শিল্প প্রতিষ্ঠান তাদের কোম্পানির জন্য টাকার মাধ্যমে এড রান করতো ।এখন প্রায় সকল ছোটো বড় সব ব্যবসায়ীরা পেইড ফেসবুক মার্কেটিং করে তাদের টার্গেট অডিন্সের কাছে তাদের প্রোডাক্ট ও সার্ভিস সম্পর্কে বিস্তারিত জানাতে পারে।

কীভাবে ফেইসবুক থেকে আয় করতে পারি?

এই প্রশ্নটি অনেকেই করে থাকেন।বর্তমানে ফেইসবুক এ অনেক মানুষ নানা উপায়ে অনেক টাকা আয় করছে।কারণ অনলাইনে আরো অনেক  টাকা আয় করার অ্যাপ থাকলেও সবগুলো বিশ্বস্ত না।

এতক্ষণ ফেসবুক মার্কেটিং নিয়ে অনেক কথা বললাম।এতো কিছু আলোচনার করার উদ্দেশ্য হলো ফেসবুক কে কীভাবে আপনি আপনার একটি উপার্জন এর মাধ্যম হিসাবে রূপান্তরিত করতে পারবেন।আলোচনা গুলোর সারমর্মে এসে এতটুকু বলতে পারি,যেহেতু বর্তমানে ফেসবুকিন্তু সেক্ষেত্রে ফেইসবুক বিশ্বস্ত একটি প্লাটফর্ম।এখন কোন কোন উপায়ে ফেইসবুক থেকে টাকা আয় করা যায় নিচে তার কিছু ধারণা দিচ্ছি -


# ফেইসবুক বিজনেস পেজ : ফেইসবুক থেকে টাকা ইনকাম করার একটি অন্যতম সহজ ও কার্যকরী উপায় হলো "ফেইসবুক বিজনেস পেজ"।একটি পেজে যার যত বেশি ফলোয়ার তার ততো বেশি টাকা ইনকাম  করার সুযোগ রয়েছে।  


# ফেসবুকে ইনস্ট্যান্ট আর্টিকেল থেকে আয় : এটি ফেইসবুক এর খুব জনপ্রিয় একটি ফিচার। বর্তমানে এর মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা আয় করা সম্ভব।আপনার ফেইসবুক পেজটি যদি জনপ্রিয় হয় তাহলে আপনার পেজে দেওয়া আর্টিকেলটি পড়তে গেলে বিভিন্ন বিজ্ঞাপন আসবে এই বিজ্ঞাপন গুলোই আপনাকে টাকা প্রদান করবে। 


# ফেইসবুক ভিডিও থেকে আয় : ইউটিউবে ভিডিও আপলোড করে টাকা ইনকাম করা যায় তা তো আমরা অনেকেই জানি ঠিক সেরকম ভাবে ফেইসবুক এ আপনি কিছু নিয়ম ফলো করেন তাহলেই আপনিও ভিডিওয়ের মাধ্যমে টাকা আয় করতে পারবেন। 


# অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে আয় : আমরা জানি বর্তমানে অনলাইনে অনেক ধরনের প্রোডাক্ট বিদ্যমান।আপনার যদি একটি ফেসবুক পেজ থাকে এবং তাতে অনেক ফলোয়ার থাকে তাহলে আপনি অন্যের যেকোনো ধরনের ফিজিক্যাল এবং ডিজিটাল পণ্য বা যেকোনো সেবা  কাস্টমারদের কাছে বিক্রি করে তা থেকে কমিশন নিতে পারেন।এটিই মূলত অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এবং ফেসবুক পেজে এর মাধ্যমেও অনেক টাকা ইনকাম করা যায়। 


# ফেসবুক পেজ বিক্রি করে টাকা আয় : ফেসবুক পেজ এর গুরুত্ব কতটা  তা তো আমরা জানিই।তাই অনলাইনের অনেক সাইড আছে যেখানে আপনি ফেসবুক পেজ বিক্রি করে টাকা উপার্জন করা যায়।


# ইনফ্লুয়েন্সের মার্কেটিং করে আয় : আপনার পেজটি যদি জনপ্রিয় হয় এবং অনেক ফ্যান ফলোয়ার থাকে তাহলে আপনি যেকোনো প্রোডাক্ট অথবা অন্য যেকোনো কিছু অথবা যেকোনো প্রতিষ্ঠান ও সেবা সম্বন্ধে তাদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে আপনি বিজ্ঞাপন দিতে পারেন।এর মাধ্যমেও ফেসবুক থেকে আপনি অর্থ উপার্জন করা সম্ভব।


উপরে অনেক গুলো উপায় জানলাম যার মাধ্যমে আপনি ফেসবুক পেজ থেকে টাকা উপার্জন করতে পারবেন।এছাড়াও সামনের দিনগুলোতে ফেসবুক আমাদের জন্য আরো অনেক পদ্ধতি নিয়ে আসবে যার মাধ্যমে এর থেকে ইনকাম করা আরো সহজ হবে।

ক মানুষের কাছে যেমন জনপ্রিয় ঠিক তেমনি এর মাধ্যমে ব্যাবসায়িক উপায়ে টাকা উপার্জন করা ঠিক ততটাই সহজ।তাহলে দেরি না করে আজ থেকেই নেমে পড়ুন একজন ফেসবুক মার্কেটার হিসাবে।লক্ষ্যে পৌঁছানো না পর্যন্ত লেগে থাকুন।"ইনশাআল্লাহ" সফলতা আসবেই।


Comments (0)

Share

Share this post with others

অনলাইন কোর্সে ১০০% স্কলারশিপের সুযোগ

অনলাইন কোর্সে ১০০% স্কলারশিপের সুযোগ

আসন সংখ্যার উপর ভিত্তি করে ইউ ওয়াই ল্যাবের সকল অনলাইন কোর্সে পাবেন ১০০% স্কলারশিপ! আসন নিশ্চিত করতে রেজিঃ করুন এখনই।