আজকের এই দ্রুত গতির দুনিয়াতে কম্পিউটার স্কিল ক্যারিয়ারের জন্য অপরিহার্য হাতিয়ার হয়ে উঠছে যা জানার ফলে আপনি যেমন অনেক ভালো ক্যারিয়ার গড়তে পারবেন তেমনি এটি না জানার ফলে ক্যারিয়ার জনিত ক্ষতিরও মুখোমুখি হতে পারেন।আমরা সবাই কোনো না কোনোভাবে কম্পিউটারের সাথে সংযুক্ত। তাই কম্পিউটারের কাজ জানা আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
শ্রম পরিসংখ্যান ব্যুরো রিপোর্ট অনুযায়ী ২৯ সালের মধ্যে কম্পিউটার দক্ষতা জনিত পেশা ১১% বৃদ্ধি পাবে। ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম এর ২২ সালের একটি তথ্য মতে যারা চাকরিজীবী রয়েছেন তাদের মধ্যে ৫৪% মানুষকে নিজেদের স্কিল আপডেট করতে হবে এবং যারা চাকরিতে জয়েন করবেন তাদের স্কিলড হতে হবে। পিউ রিসার্চ এর একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে ৫২% মানুষ মনে করেন যে তাদের কর্মক্ষেত্রের সফলতার জন্য কম্পিউটার উপরে দক্ষতার বিকল্প নেই।
তাছাড়া বাংলাদেশেও বর্তমানে ০.২২ মিলিয়ন মানুষ আইটি সেক্টরে কাজ করছে যা ২০২৫ সালে ০.৪৪ মিলিয়ন হবে হবে ধারণা করা হচ্ছে। সরকার (SEIP) এর প্রোগ্রামের মাধ্যমে ২০১৫ সাল থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ৩ লাখেরও বেশি তরুণ তরুণীকে কম্পিউটার দক্ষতা অর্জন করার ব্যবস্থা করে দিয়েছে। যার মাধ্যমে তারা এই দক্ষতা অর্জন করে যেমন ফ্রিল্যান্সিং করতে পারছে তেমনি চাকরি করেও ইনকাম করছে।বাংলাদেশে বর্তমানে আইটিস্কিলের ঘাটতির কারণে ৪০% আইটি সম্পর্কিত চাকরি খালি পড়ে আছে। তাই ২৩ সালে এসেও আপনি যদি কম্পিউটারের উপর দক্ষতা অর্জন করতে না পারেন সেটি যে আপনার জন্য ভালো কিছু না তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না । তাই আজ আমরা ২৩ সালে এসে কেন কম্পিউটারের উপর দক্ষতা অর্জন জরুরি সে সম্পর্কে জানবো।
কম্পিউটার দক্ষতা বা স্কিল কী?
বর্তমান যুগে কম্পিউটার আমাদের জীবনের জন্য আমূল পরিবর্তন এনে দিয়েছে। ১৯৪২ চার্লস ব্যাবেজের হাত ধরে আমরা কম্পিউটারের সাথে প্রথম পরিচিত হই। ধীরে ধীরে এটি বর্তমানের আধুনিক কম্পিউটারে রূপ নে যেটির সাহায্যে আমরা এখন খুব সহজেই অনেক ধরনের কাজ করতে পারি। যেমন : গ্রাফিক্স ডিজাইন, ভিডিও এডিটিং , ওয়েব ডেভেলপমেন্ট , ডাটা এন্ট্রি ,ডিজিটাল মার্কেটিং ইত্যাদি। আর এই ধরনের কাজ করার জন্য একজন মানুষকে যে ধরনের স্কিল বা দক্ষতা অর্জন করা লাগে তাকেই কম্পিউটারের স্কিল বা দক্ষতা বলা হয়।
কম্পিউটারের বেসিক কিছু স্কিল :
> কম্পিউটার অন অফ করা
> অফিসিয়াল সফটওয়্যার সর্ম্পকে জানা
> বেসিক হার্ডওয়্যার সম্পর্কে ধারণা রাখা
> সফটওয়্যার ইনস্টল ও আনইনস্টল করা
> ই-মেইল কীভাবে পাঠাতে হয় তা জানা
> বেসিক ইন্টারনেট সম্পর্কে জানা
কম্পিউটারের অ্যাডভান্স কিছু স্কিল :
> গ্রাফিক্স ডিজাইন
> ভিডিও এডিটিং
> ওয়েব ডেভেলপমেন্ট
> ডিজিটাল মার্কেটিং
> ইথিক্যাল হ্যাকিং
> অ্যানিমেশন
> সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট
> ইন্টেরিয়র ডিজাইন
এই সমস্ত বেসিক ও অ্যাডভান্স স্কিলগুলো ২৩ সালে এসে যদি অর্জন করতে পারেন তবে আইটি ইন্ডাস্ট্রিতে যে কোনো মানুষ তার ক্যারিয়ার খুব সুন্দরভাবেই গড়তে পারবে। যা আপনাকে দিবে একটি সুন্দর ক্যারিয়ারের নিশ্চয়তা।
কম্পিউটার স্কিল কেন শিখবো ?
বর্তমানে অন্যান্য স্কিল এর পাশাপাশি কাজ করার জন্য কম্পিউটারের বেসিক অথবা অ্যাডভান্স স্কিল জানতে হয় তাই ২০ এর এই দশকে এসে অবশ্যই কম্পিউটারের উপর দক্ষতা থাকতে হবে। কেননা প্রতিটি সেক্টরে বর্তমানে কম্পিউটারের ব্যবহার রয়েছে আর তাই আপনার শিক্ষাগত যোগ্যতার পাশাপাশি কম্পিউটারের উপরের দক্ষতারও প্রয়োজন হয়। তাছাড়া কম্পিউটারের স্কিল দিয়ে বর্তমান যুগে অনেক তরুণ তরুণী তাদের ক্যারিয়ার গড়ে তুলছে। এর মাধ্যমে তারা মাসে লক্ষাধিক টাকার উপরে অনলাইনে ফ্রিল্যান্সিং করে আয় করছে। আর তাই বর্তমান যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে হলে আপনাকে অবশ্যই কম্পিউটারের বেসিক কিংবা অ্যাডভান্স স্কিল জানতে হবে।
এই স্কিলগুলো যেকোনো কর্মক্ষেত্রে আপনাকে সাহায্য করবে যা আপনাকে নিজের কর্মক্ষেত্রে অনেক বেশি আত্মবিশ্বাস যোগাবে তেমনি অনেক ভালোপরিমানে ইনকাম করারও সুযোগ করে দিবে। তাছাড়া ২৩ সালের এই সময়কালে এসে নির্দিষ্ট ইনকামের পাশাপাশি যদি প্যাসিভ ইনকাম করতে চান তবে কম্পিউটারের দক্ষতা এইক্ষেত্রে আপনার বন্ধু হতে পারে এবং আপনার উপার্জনের পথ সুগম করে দিতে পারে।
কীভাবে কম্পিউটার স্কিল শিখবো ?
কম্পিউটারের স্কিল শিখতে হলে আপনাকে প্রথমেই অবশ্যই একটি কম্পিউটার কিনতে হবে। এবং তারপর আপনি কম্পিউটারের বিভিন্ন স্কিলের মধ্যে যেমন : গ্রাফিক্স ডিজাইন, ভিডিও এডিটিং , ওয়েব ডেভেলপমেন্ট ,ডিজিটাল মার্কেটিং ইত্যাদি স্কিলের মধ্যে যে স্কিলটি আপনার ভালো লাগে সেটি শিখতে পারেন। এই স্কিলগুলো আপনি বিভিন্ন আইটি প্রতিষ্ঠান থেকে অনলাইন অফলাইনের মাধ্যমে শিখতে পারেন বা ইউটিউব থেকেও বিভিন্ন ভিডিও দেখে শিখতে পারেন বা Udemy বা Skillshare এ জায়গাগুলো থেকে কোর্স কিনে শিখতে পারেন। এইক্ষেত্রে আপনার শিক্ষার ইচ্ছাশক্তি, ধৈর্য, সৃজনশীলতা আপনাকে তা অর্জন করতে সাহায্য করবে আর তাই আপনার মধ্যে যদি এই সমস্ত জিনিস থাকে তবে আপনি নিজেকে একজন দক্ষ মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে পারবেন।
তাছাড়াও আপনি অনলাইন মার্কেটপ্লেসে সফলতার সাথে কাজ করা অনেক স্যার কিংবা মেন্টরদের দ্বারা এই ধরনের কম্পিউটারের স্কিলগুলো শিখতে পারবেন। স্যারদের মাধ্যমে আপনি স্কিল শেখার পাশাপাশি স্কিলগুলো শিখে সে স্কিলগুলো কাজে লাগিয়ে আপনি কীভাবে অনলাইন মার্কেটপ্লেস অথবা নিজের ক্যারিয়ার কীভাবে গড়ে তুলবেন সে সম্পর্কে ভালো একটি গাইডলাইন পাবেন। আর পরবর্তীতে আপনি সে স্কিলগুলো কাজে লাগাতে পারবেন জব মার্কেটে প্রবেশ করার মাধ্যমে অথবা অনলাইন মার্কেটপ্লেসগুলোতে কাজের মাধ্যমে
কম্পিউটারের স্কিলের চাহিদা কেমন ?
বর্তমানে প্রতিটি ক্ষেত্রে কম্পিউটারের ব্যবহার হওয়ার ফলে কম্পিউটারের স্কিলের চাহিদাও দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। কম্পিউটারের স্কিল দিয়ে আপনি যেকোনো জায়গায় চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে অন্যদের থেকে এগিয়ে থাকতে পারেন। যেকোনো অফিসিয়াল কাজেই বর্তমানে কম্পিউটার ব্যবহার করা হয় আর তাই কম্পিউটারের স্কিল দিয়েই আপনি ওই সমস্ত কাজ সহজে করতে পারেন। তাছাড়া আপনি যদি ঘরে বসে ফ্রিল্যান্সিং করে অনলাইন মার্কেটপ্লেস থেকে আয় করে নিজের ক্যারিয়ার গড়ে তুলতে চান তবে আপনাকে অবশ্যই কম্পিউটারের স্কিল দিয়েই সে চাহিদা পূরণ করতে হবে। আর তাই অনলাইনে কাজের পরিমাণ দিন দিন বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে কম্পিউটারের স্কিলের চাহিদাও দিন দিন আকাশচুম্বী হচ্ছে এবং কম্পিউটারের স্কিল দিয়ে কাজের পরিমাণ দিন দিন বৃদ্ধি পেতে থাকবে। তাই এর চাহিদাও বর্তমানে যা রয়েছে তার থেকেও বেশি বৃদ্ধি পাবে।
কম্পিউটার স্কিলের ভবিষ্যৎ :
কম্পিউটার তথ্য ও প্রযুক্তি একটি আমূল পরিবর্তন সাধন করেছে তাই বর্তমানে একজন মানুষের অন্যদের থেকে এগিয়ে থাকতে হলে অবশ্যই কম্পিউটারের স্কিল শেখাটা জরুরি। তাছাড়াও বর্তমানে বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশের তরুণ প্রজন্ম কম্পিউটারের স্কিল শিখে নিজেদের ক্যারিয়ার গড়ে তুলছে। যার মাধ্যমে তারা মাসে হাজার হাজার ডলার ইনকাম করছে। আর তাই আপনি যদি ঘরে বসে ইনকাম করে নিজের ক্যারিয়ার গড়ে তুলতে চান তবে আজ থেকেই নিজের কম্পিউটারের স্কিল ডেভেলপ করা শুরু করে দিন। কেননা ভবিষ্যৎ জগৎ অনেকটাই কম্পিউটার নির্ভর হয়ে যাবে আর তাই কম্পিউটারের স্কিলের উজ্জ্বল একটি ভবিষ্যৎ রয়েছে।
তাই ২০২৩ বা এই ধরণের সময়কালে এসে কম্পিউটারের উপর দক্ষতা অর্জন করা রীতিমতো অপরিহার্য হয়ে উঠছে। চাকরির বিজ্ঞাপনগুলোর বেশিরভাগের মধ্যেই এখন কম্পিউটারের কোনো না কোনো স্কিল চায় তাই চাকরি করতে হলেও একজন মানুষের ২৩ সালে এসে কম্পিউটার জানতে হয়। আমরা যদি কম্পিউটারের উপর দক্ষতা অর্জন করি তবে সেটি যেমন এখন কাজে লাগবে তেমনি ভবিষ্যতের জন্যও আপনাকে চিন্তামুক্ত রাখবে। আর তাই দেরি না করে ২৩ সালের পাশাপাশি ভবিষ্যতের জন্যও শিখে ফেলুন কম্পিউটার স্কিল।
আসন সংখ্যার উপর ভিত্তি করে ইউ ওয়াই ল্যাবের সকল অনলাইন কোর্সে পাবেন ১০০% স্কলারশিপ! আসন নিশ্চিত করতে রেজিঃ করুন এখনই।